| বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০১৭ | পড়া হয়েছে 8213 বার
বাড়ি কোথায়?
-ব্রাহ্মণবাড়ীয়া বেশি দূরে না ঢাকা থেকে মাত্র ১০৫ কি.মি. ট্রেনে দুই ঘন্টা আর বাসে দুই ঘন্টা ৩০ মিনিট. একটু এসে দেখে যান আমাদের সাজানো গোছানো পরিপাটি শহরটাকে. বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ……………
ব্রাহ্মণবাড়িয়া !
চিনতে কষ্ট হচ্ছে ? আপনি কি বাংলাদেশেই থাকেন ? আপনি জানেন কি!
আমাদের ব্রাহ্মলণবাড়িয়া জেলায় একটি স্থল বন্দর, একটি নৌ-বন্দর এবং একটি রেল-জংশন আছে। বাংলাদেশর আর কোন জেলায় আছে এই তিনটা এক সাথে ?
বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ কি জানেন ?
প্রাকৃতিক গ্যাস,
হ্যা,
তিতাস গ্যাসের নাম শুনেছেন নিশ্চয় ?
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ করে। সেইটা আমার জেলায় উৎপাদিত গ্যাস।
পুরো ঢাকার গ্যাস সহ সারা দেশের এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ করা হয় আমার জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া খেকে।
আচ্ছা ঢাকা তো বাংলাদেশের রাজধানী তাই না ? আপনি কি জানেন ! সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সর্বত্র পরিচিত।
কিছু বুঝলেন ! আরো আছে দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আমার জেলাতেই।
দেশের ইউরিয়া সারের বৃহত্তম শিল্প কারখানা আমার জেলাতেই। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম পুতুল নাচের প্রচলন করে আমার জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
আমাদের গুনীজনদের কথা একটু শুনুন.. উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন হযরত মাওলালা তাজুল ইসলাম ফখরে বাঙ্গাল (রহ), জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুছ মাখন,উপমহাদেশর প্রখ্যাত সংগীত ব্যক্তিত্ব সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, অর্থনীতিবিদ ড. আলী আকবর খান, বিশ্ববিখ্যাত শাস্ত্রীয়
সঙ্গীত শিল্পী, ১৯৭১ এর ১ আগস্ট নিউইর্য়কের ম্যাডিসন স্কয়ারে অনুষ্ঠিত কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর অন্যতম আয়োজক, মলয়া সংগীতের
জনক মনমোহন দত্ত , সাধক পুরুষ ও সঙ্গিতজ্ঞ ফকির আফতাব উদ্দিন খাঁ, কবি আবদুল কাদির, বাংলাদেশের সঙ্গীতের জাদুকর বলে অভিহিত করা হয় সুরকার শেখ সাদী খান, পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী সঙ্গীত শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী, পাকিস্তানের গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপনকারী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ভাষা সৈনিক অলি আহাদ , ভাষা সৈনিক শেখ আবু হামেদ, প্রথম বাঙালী মুসলমান ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার আবদুর রসুল, নাসার মহাকাশ গবেষক, ৪০টিরও বেশি সংকর ধাতু উদ্ভাবন করেছেন। এই সংকর ধাতুগুলো ইঞ্জিনকে আরো হালকা করেছে, যার ফলে উড়োজাহাজের পক্ষে আরো দ্রুত উড্ডয়ন সম্ভব হয়েছে এবং ট্রেনকে আরো গতিশীল করেছেন তিনি হলেন আব্দুস সাত্তার খান, , কথা সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক অদ্বৈত মল্লবর্মণ, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ্, পি আই বি মহা পরিচালক শাহ আলমগীর, সাংবাদিকতায় শফিক রেহমান, তুষার আব্দুল্লাহ, সহ আরো অনেক খ্যাতিমানদের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। তারা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান।
এছাড়াও সুবল দাস, বাহাদুর খান, কিরীট খান, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, মোরশেদুল ইসলাম, অমিতাভ রেজা, সাগর জাহান, গোলাম সোহরাব দোদুল এমনকি নাট্য ব্যক্তিত্ব আলী যাকের, অভিনেতা আলমগীর, ইরেশ যাকের, অভিনেতা জাকিয়া বারি মম, সাজু খাদেম, কন্ঠ শিল্পী আরেফিন রুমি, আখি আলমগীর সহ আরো অনেকেই আছেন যারা নিজ মহিমায় পুরু বিশ্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে তুলে ধরেছে।
এমন নাম না জানা হাজারো দেশ বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছে যারা আমার জেলার সন্তান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্প সংস্কৃতির ধারক ও বাহক এবং দলমত নির্বিশেষে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল মিলন মেলা হিসেবে এ দেশের মানচিত্রে বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত, তাই গর্ব করে বলি আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান।
লেখা- সংগ্রহীত