এস এ রুবেল | রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৭ | পড়া হয়েছে 5803 বার
হিরামতি ঋষিকে ভালবেসে বিয়ে করে নিরাঞ্জন। বাবা মায়ের অমতে বিয়ে করায় ছেলের বউকে মেনে নেননি তারা। নবীনগর পৌর এলাকার ভোলাচং ঋষি পাড়ার বাসিন্দা নিরাঞ্জন। একই পাড়ার হিরামতির সাথে প্রণয় চলছে অনেকদিন ধরেই। প্রনয় পরিপুর্নতা পায় পরিনয়ে।
বিয়ে করেই তার ভিতরে পাপবোধ কাজ করে যখন সে বাবা মায়ের মলিন মুখের দিকে তাকায়। অন্যদিকে হিরামতিকে ঘরে তুলতে না পারার ব্যর্থতা তাকে দিশেহারা করে দেয়। কি করবে ভাবনায় আসে না তার। দু-টানায় পরে নিরাঞ্জন।
ক্রিকেটার হিসেবে এলাকায় তার একটা পরিচিতি আছে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে এবারো পাড়ার ছেলেরা আনন্দ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নয়টি উপজেলা থেকে ঋষি সম্প্রদায়ের দশটি দল এ টুর্নামেন্ট এ অংশ নেয়। সেকারনে এ পাড়ার মানুষজনেরও আলাদা আগ্রহ রয়েছে এ খেলার প্রতি।
দলে ডাক পরে নিরাঞ্জনের। বিয়ের ভাবনা সারাদিন মাথায় ঘুরপাক থাকার কারনে খেলায় গিয়েও মনমরা থাকে সে।
বিষয়টি অন্য ছেলেদের নজরে পরায় নিরাঞ্জনের বাবা মাকে অনুরোধ করেন পুত্রবধুকে ঘরে তোলে নেওয়ার জন্য।
একটা সময় মায়ের মন নরম হয়। তবে তিনি শর্ত তুলে দেন ছেলেকে। যদি ফাইনালে নিজের গ্রামের মান রক্ষায় দল জিতিয়ে আনতে পারে তবেই তিনি হিরামতিকে ঘরে তুলবেন।
অবশেষে নিরাঞ্জনের দল ফাইনাল খেলে। গতকাল শুক্রবার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত খেলায় তার দল প্রতিদন্ধিতা করে কসবা উপজেলার রাউৎহাট একাদশের সাথে।
খেলা শুরু হলে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী নারী দর্শকের দখলে ছিল খেলার মাঠ। এর আগে এত মহিলা দর্শক উপজেলায় কোন মাঠে দেখা গেছে বলে মনে হয়না।
একদিকে গ্রামের মান অন্যদিকে নিরাঞ্জনের স্বপ্ন পুরন সেকারনে খেলা চলাকালীন সময়ে বুঝা গেল ঋষি পাড়া তখন জনমানব শুন্য ছিল।
সকলের আশির্বাদ ও নিরাঞ্জনের সর্বাত্মক প্রচেস্টার ফলে তার দল জয় ছিনিয়ে নেয়। মজার ব্যাপার হল এ খেলায় নিরাঞ্জন সর্বোচ্চ রান করে। তার রানের সংখ্যা ছিল উনচল্লিশ।
সবশেষে বলা যায় নিরাঞ্জনরা এভাবেই জয় ছিনিয়ে আনে।
তবে একটা বিষয়ে মনে প্রশ্ন জাগে! সে কি জানতো তার ব্যাটে বল লেগে যখন ছক্কা হাকায় সে, তখন মাঠের এককোনায় দর্শকসাড়িতে দাঁড়িয়ে তার হিরামতিও মিটি মিটি হাসছিল।