সত্য রঞ্জন রায় | শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০১৬ | পড়া হয়েছে 1571 বার
ডিম হচ্ছে বি ভিটামিন, পুষ্টি উপাদান ও প্রোটিনের চমৎকার উৎস। হৃদস্বাস্থ্যের উপর ডিমের প্রভাব নিয়ে বিতর্ক আছে। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, খাদ্যতালিকায় ডিমের অন্তর্ভুক্তি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয় যে, সকালের নাশতায় ডিম খাওয়া সিরিয়াল বা অন্য নাশতা খাওয়ার তুলনায় মানুষকে সারাদিনে অন্য চিনিযুক্ত খাবার বা ফাস্ট ফুড খাওয়া থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। মুরগীর ডিম সম্পর্কে আরো কিছু অজানা তথ্য জেনে নিই চলুন।
১। মস্তিষ্কের গঠনে সহায়তা করে ডিমের কুসুম হচ্ছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের সমৃদ্ধ উৎস। যা স্নায়বিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত এবং প্রদাহ কমতেও সাহায্য করে। প্রেগন্যান্ট নারীরা যখন ডিম খান তখন ডায়াটারি কোলাইন ভ্রুনের মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোলাইন সমৃদ্ধ খাবার খেলে মানুষ ভালো ও সুখ অনুভব করে। ডায়েট স্পেশিয়ালিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্ট ড্রিউ রামসে হাফিংটন পোস্টকে বলেন, কোলাইন ভেঙ্গে বিথেনে পরিণত হয় যা মিথাইলেশন চক্রে ব্যবহৃত হয় যা সুখ সৃষ্টিকারী হরমোন সেরেটোনিন ও ডোপামিন তৈরিতে সাহায্য করে।
২। পারফেক্ট প্রোটিন প্রোটিনের মানের কথা যখন আসে তখন বলতে হয় যে ডিম “গোল্ড ষ্ট্যাণ্ডার্ড”। এর কারণ হচ্ছে ডিমে পাওয়া সবগুলো প্রোটিনই শরীরে শোষিত হয়।
৩। মুরগীর বয়স যখন মানের কথা আসে তখন ডিমের আগে মুরগীর নামটাই আসে। পোলট্রি সায়েন্স এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ২৮ সপ্তাহ বয়সের তরুণ মুরগীর এবং ৯৭ সপ্তাহ বয়সের বয়স্ক মুরগীর উভয়ের ডিমেই লো সলিড কনটেন্ট থাকে এদের মাঝামাঝি বয়সের মুরগীর চেয়ে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, “ডিম উৎপাদনকারী ও প্রক্রিয়াজাতকারীদের জন্য তরুণ ও বয়স্ক পাখি পালন করা লাভজনক, অন্যদিকে লিকুইড এগ প্রোডাকশনের জন্য মধ্যবয়স্ক মুরগী পালন করা লাভজনক”।
৪। ডিমের কুসুমের রঙ আমেরিকান এগ এসোসিয়েশনের মতে, ডিমের কুসুমের বর্ণ গাঁড় হলুদ বা ফ্যাকাসে হওয়ার সাথে স্বাস্থ্যকর কিনা তা পরিমাপ করা যায়না। এটি মুরগীর খাবারের উপর নির্ভর করে। যে মুরগী ক্যারোটিনয়েডস সমৃদ্ধ শস্য ও ঘাস খায় তাদের কুসুমের রঙ গাঁড় হলুদ হয়। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে এটি বেশি পুষ্টিকর।
৫। ডিমের সাদা অংশ ডিমের সাদা অংশের বর্ণ স্বচ্ছ বা ক্লাউডি হয় ডিমের বয়সের কারণে। বয়স্ক ডিমের সাদা অংশ স্বচ্ছ থাকে এবং তাজা ডিমের সাদা অংশ দুধের ন্যায় অস্বচ্ছ হয়।
৬। ডিমের খোলসের বর্ণ ডিমের খোলসের বর্ণের সাথে স্বাস্থ্য উপকারিতার কোন সম্পর্ক নেই। মুরগীর স্বাস্থ্যের সাথেও এর কোন সম্পর্ক নেই। মুরগীর দেহের বর্ণের সাথে ডিমের খোলসের রঙের মিল থাকবে এমন কোন কথা নেই।
৭। ডিমের বয়স USDA এর মতে ডিমের খোলসের গায়ে মেয়াদ উত্তীর্ণের যে তারিখ দেয়া থাকে তার পরেও ৩-৫ সপ্তাহ ভালো থাকে ডিম। আমাদের দেশে এই ব্যবস্থাটি এখনো কার্যকর হয়নি। চীন সবচেয়ে বেশি ডিম উৎপাদনকারী দেশ। একজন আমেরিকান বছরে ২৫০টি ডিম খেয়ে থাকে। রোমানরা ডিমকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করে।