এস এ রুবেল | বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০১৭ | পড়া হয়েছে 2112 বার
“মাদককে না বলুন, খেলাকে হ্যা বলুন” এ মন্ত্রে নবীনগরের ইউএনও অভিনব কৌশলে ক্রিকেট মাদকতায় তরুনদের আকৃষ্ট করে চলছেন । মাদক শুধুমাত্র নিজেকেই শেষ করে দেয়না। মাদকসেবী নিজেই গুটা সংসার ধ্বংসের পেছনে মুল কারিগরের ভুমিকায় থাকে ।
প্রাণচাঞ্চল্য একজন ব্যক্তি যখন মাদকের জগতে প্রবেশ করে তখন হয়তোবা ক্ষনিকের মোহ তাকে আচ্ছাদনীয় করে রাখে। ধীরে ধীরে পুরুপুরি আসক্ত হলেই টের পায় মাদকের ভয়াবহতা।মাদকে আসক্ত ব্যক্তি মাদক গ্রহন ছাড়া টের পায় তার দেহের অস্বাভাবিকতা।
হাসিখুশি মুখে কথা বলা মানুষটা মাদকের ছোবলে একটা সময়ে নিস্তেজ হয়ে পরে। মাদকের নীল ধ্বংসন একজন ব্যক্তিকে কাবু করে দ্রুত, যার পরনতি সে আর কখনো মাথা উচু করে কথা বলার সাহস রাখেনা। এমনকি একজন মাদকসেবীর কাছে পরিবারের লোকজনকেও গুরুত্বহীন মনে হয়।
তরুন প্রজন্মকে একটা সময় দেশের হাল ধরতে হবে। যে মাদকসেবী ব্যক্তিটি পরিবারের দায়ীত্ব নিতে অপারগ সেকি করে দেশ চালানোর গুরুদায়িত্ব নিবে।
একটা বিষয় স্পষ্ট ইদানিং তরুনদের অনেকেই নেশায় মজে যাচ্ছেন।এর ভবিষ্যত কোনদিকে ধাবিত হচ্ছে? কেউ ভেবেছেন কি?
“মাদককে না বলুন, খেলাকে হ্যা বলুন” “বিকেল হলে মাঠে চল” এ স্লোগান খুব বেশি দিনের নয়। সকল প্রকার মাদক পরিহার করে খেলার নেশায় ডুবে থাকার পরামর্শ দিয়ে ইতোমধ্যে পৌর শহরের তরুনদের মাঠে এক করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন নবীনগরের ইউএনও তানভীর সালেহীন গাজী। অভিনব কৌশলে তিনি তরুনদের খেলার নেশায় আকৃষ্ট করছেন।
নবীনগর সরকারী কলেজ মাঠ এখন বিকালবেলা তরুনদের দখলে থাকে। স্কুল কলেজগামী ছাত্র, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক,সাংবাদিক,ব্যবসায়ী সহ বহু তরুন এখন মাঠে হাজির হয় বেট আর বল নিয়ে।
মাদক ছোবার সময় কই? কিংবা অলস সময়ে অশুভ সঙ্গ পরিহার করে ক্রিকেট খেলার মাঝে তৃপ্তি যেন অনেক বেশি। তাই এখানকার তরুনদের বেশির ভাগই এখন ইউএনও’র ক্রিকেট খেলার মন্ত্রে দিক্ষা নিচ্ছেন।
ক্ষতি কি এভাবেই হয়তোবা একদিন দেশ সেরা মাশরাফি,সাকিব, মুশফিক, তামিমদের মত ক্রিকেটার এখান থেকেই বেরিয়ে আসবে ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর সালেহীন গাজী ‘ইউএনও নবীনগর’ ফেসবুক আইডিতে স্ট্যটাসে লিখেন, নেশার আমন্ত্রনে ছুটে গিয়েছি মাঠে। খেলার নেশা।ক্রিকেটের নেশা। খেলা ছিল নবীনগর সাংবাদিক একাদশ বনাম নবীনগর যুবলীগ একাদশ। খেলার ফলাফলে একদল জয়ী হয়েছে। সেটা তো হবেই।
আমি কমিটমেন্ট আদায় করে চলেছি।
আমার কথা একটাই। সিগারেট থেকে শুরু হয় নেশার রাজ্যে প্রবেশ। অনেকেই বলবে এটা সমাজ অনুমোদিত। হোক সেটা। আপত্তি নেই। কমিটমেন্ট নিয়েছি যে আপনি স্মোকার হলে ছাড়তে না পারুন,দয়া করে ছোট ভাই, সন্তান কারো সামনে ধুমপান করবেন না। এতে তারা উদ্বুদ্ধ হয়।
বড়দের জ্ঞান বিতরণ করার কোন উদ্দেশ্য নেই। আমার লক্ষ্য তরুনরা যারা এখনো ধুমপান/ নেশায় আসক্ত হয়নি। আমি এগিয়ে যাচ্ছি সফলতাও পেতে শুরু করেছি।
তিনি লিখায় আরো উল্যেখ করেন “মাদককে না, খেলাকে হ্যা বলুন” এই স্লোগানে যে কোন খেলার আয়োজনে প্রশাসন কে পাশে পাবেন।
উল্যেখ্য, নবীনগর সরকারী কলেজ মাঠে আয়োজিত নবীনগর সাংবাদিক একাদশ বনাম নবীনগর যুবলীগ একাদশের মধ্যকার খেলায় অতিথি খেলোয়াড় হিসাবে তিনি (ইউএনও) ৩৮ রান করেন।
ইউএনও’র এ ব্যতিক্রমী প্রয়াস সব মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
লেখা- এস এ রুবেল
সম্পাদক, নবীনগর টুয়েন্টি ফোর ডটকম