দিপু আহমেদ | বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | পড়া হয়েছে 2747 বার
নবীনগরে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনছেন। বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুরে চামড়া কিনে লোকসানের মুখে পড়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেভাবে চামড়া ক্রয় করেছেন পাইকাররা ওই দামেও কিনতে রাজি না হওয়ায় তাতে মূলধন হারানোর সঙ্গে চামড়া সংগ্রহের পারিশ্রমিকও হারাতে হয়েছে অনেক ব্যবসায়ীর।
উপজেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লার গুরুত্বপুর্ণ হাটে ঈদের দিন বিকাল থেকেই চামড়ার স্তুপ জমতে থাকে। সেখান থেকেই পাইকাররা ঘুরেফিরে এগুলো ক্রয় করেন। জিনোদপুর ইউনিয়নের বাংগরা বাজারের চিত্র ছিল চোখে পরার মত। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মৌসুমী ব্যাবসায়ীরা চড়া দামে চামড়া ক্রয় করে বাজারে নিয়ে আসে।
তাদের দাবি, সরকার ঘোষিত ফুটে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে দর-কষাকষি করে চামড়া কিনেছেন তারা।
গতকাল রাতভর চলে বেচাকেনা। চামড়া কেনায় পাইকারদের নেই তেমন আগ্রহ। আবার বৃষ্টি জনিত কারনে সাধারণ ব্যাবসায়ীদের অনেকে কেনা দরের চেয়েও কমে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মাঠ পর্যায়ে ঘুরে চামড়া কিনে আনা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানালেন, প্রতিটা গরুর চামড়া এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশত দিয়ে ক্রয় করেন তিনি। সারাদিন খাটুনি,বহন খরচ, শ্রমিক খরচ,সব মিলিয়ে ওই চামড়া বজারে আনার পর আশানুরূপ বিক্রি করতে না পারার কারনে বিপাকে পড়ে যায় তার মত অনেক সাধারন ব্যাবসায়ী।
এতে করে ফায়দা লুটছে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যাবসায়ী। যেই চামড়ার দাম ১১ শত থেকে ১৩ শত টাকা। সেই চামড়া ফায়দা লোভি গুটিকয়েক ব্যবসায়ী দাম হাকে ৬ শত টাকা থেকে ৬৫০ টাকা। এ কারনে সাধারন ব্যাবসায়ীমহল লোকসান গুনছেন।
সাধারন ব্যাসায়ীরা মনে করছেন। জনবহুল গুরুত্বপুর্ণ বাংগরা বাজারর চামড়া ব্যবসায় বেশ সুনাম রয়েছে অনেক আগ থেকে। তাদের প্রশ্ন আট দশ গ্রামের কোরবানির পশুর চামড়া জমায়েত হয় এ বাজারে তার পরেও এখানে বড় ধরনের পাইকারদের উপস্থিতি তেমন চোখে পরেনা কেন?
নানান জনের নানান কথায় স্পষ্ট হয়,কোন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারন ব্যাবসায়ীদের কে ঠকানো হচ্ছে।
বিভিন্ন জনের সাথে আলাপকালে জানায়, প্রতি চামড়ায় ৩০০-৪০০ টাকা লোকসান দিয়েই তারা তা বিক্রি করছেন। ইব্রাহিম্পুর ইউনিয়নের কাজেল্ল গ্রামের মিল্লাল মিয়া চামড়া ক্রয় করেছে ৩৫ টি প্রতি পিছ চামড়া গড়ে ১ হাজার থেকে ১৩০০ টাকা। মালাই গ্রামের মিজান মিয়া ৩০ টি ৯০০ থেকে১১০০টাকা, বলিবাড়ি গ্রামের ফারুক মিয়া ৩৭ টি প্রতি পিছ ১১০০ থেকে ১৪০০ টাকা। কাসিমপুর গ্রামের কালু মিয়া ৭০ টি ৯০০থেকে ১২০০ টাকা।
তাদের বক্তব্য, সালার পাইকাররা আইয়া দাম কই ৬০০থেকে৭০০টেহা (টাকা)।
তারা জানান এই দামে চামড়া বিক্রি করলে প্রতি চামড়াতে লস অইব ৪০০ থাইক্কা ৫০০ টেহা। সরকার চামড়ার দাম দিছে ৪০ টেহা ফুট আর হেরা কই ৩০ টেহা ৩৫ টেহা ফুট।
জিনদপুর গ্রামের ক্ষুদ্র চামড়া ব্যাবসায়ী আবুল হোসেন, ছবির হোসেন, আল আমীন, নীল নগর গ্রামের সফিকুলের সাথে। তারা বলেন, আমরা বিকালে চামড়া নিয়ে এসে রাত ১২ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে ১২ শত থেকে ১৩ শত টাকায় কেনা চামড়া ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করি। এছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই লাভের আশায় কষ্ট করে ও লোকসান গুনতে হল। এটা শুধু আমরা নই। আমাদের মত সকল ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের একই অবস্থা।
নবীনগর সদর, তঞ্জুব আলী মার্কেট(আলিয়াবাদ) ভোলাচং, জিনদপুর, রছুল্লাবাদ ঈদ্গাহ মোড় সব জায়গাতে একই চিত্র।