ডেস্ক রিপোর্ট | মঙ্গলবার, ০৫ জুন ২০১৮ | পড়া হয়েছে 1560 বার
নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের বিদ্যাকুট গ্রামে ভুল চিকিৎসায় এক দরিদ্র কৃষকের লক্ষাধিক টাকার একটি গাভী গরু মারা গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি ওই পশু চিকিৎসকের শাস্তির দাবী জানিয়ে ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগে উল্যেখ করা হয়, বিদ্যাকুট গ্রামের আব্দুল হাকিম মিয়ার ছেলে জয়দুল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে একটি গাভী পালন করে আসছে।
গত ১৫ দিন আগে আকস্মিক গাভীটি অসুস্থ হওয়ায় জয়দুল স্থানীয় পশু চিকিৎসক মোঃ কবির আহাম্মদের শরণাপন্ন হলে তিনি গাভীটিকে দেখে জানান, গাভীটি বাত রোগে আক্রান্ত। সেমতে ইনজেকশন দিতে হবে বলার পর জয়দুল এটি ৮ মাসের গাভী এ কথা জানান।
অভিযোগে আরো উল্যেখ করা হয়,ওই চিকিৎসক গরুটিকে ইঞ্জেকশন পুশ করার পর থেকে তার গরুটির সাস্থ্যের ব্যাপক অবনতি ঘটে। এবং পরেরদিন গাভীটি একটা বাছুর প্রসব করে।
ওই চিকিৎসককে এ ঘটনা জানানোর পরে তিনি গাভী ও বাছুরটিকে দেখে ওষুধ লিখে জয়দুলকে তার চেম্বারে যেতে বলেন। একমাত্র অবলম্বন গাভীটি সুস্থ করার লক্ষ্যে কয়েক দফায় ২০০০ / ৩০০০ টাকা করেও ওষুদ কিনেন জয়দুল।
দিনদিন গাভীটির অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দরিদ্র জয়দুল বারবার ওই চিকিৎসকের দোকানে ধরনা দেন। গাভীটিকে উন্নত চিকিৎসার কথা বললে ওই চিকিৎসক কাউকে দেখাতে হবেনা এ কথা বলে জয়দুলকে বিদায় করে দেন।
অভিযোগ পত্রে আরো উল্যেখ করা হয়, গত ২৬ মে সকালে জয়দুল গাভীটির অবস্থা করুন দেখে ওই চিকিৎসকের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানানোর পরে রাগত্ব স্বরে কথা না বলেই ফোনের লাইনটি কেটে দেন তিনি।
ওই দিন বিকালে গাভীটি মারা যায়।
দরিদ্র কৃষক জয়দুলের আশা ছিল গাভীটি বিক্রি করে নিজের মেয়েকে পরের ঘরে তোলে দেওয়ার বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করবেন।
জয়দুল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, সংসারে তিনটা মেয়ে বিবাহযোগ্যা। একটু স্বচ্ছলতার আশায় বিদেশ গিয়েও ফেরত আসতে হয়েছে তাকে।
ধার দেনার টাকায় বিদেশ গিয়ে সুবিধা করতে না পারায় ঋণের বোঝা এখনো তার মাথায়।
কথা বলতে বলতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে জয়দুল। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ভাবতে থাকে সে। কি হবে মেয়ে তিনটার, কিভাবে চলবে সংসার। এ চিন্তায় পৃথিবীটা যেন ঘোলা লাগে তার কাছে।
জানা গেছে, বিদ্যাকুট বাজারের পশু পুষ্টি ঔষাদালয় নামে এক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক এই কবির আহাম্মদ।
ডাক্তার না হয়েও শুধুমাত্র ওষুদের দোকান খুলে নিজেই পশুর চিকিৎসা করান।
প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা না নিয়েই সনদবিহীন এই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় গাভীটি মারা যাওয়ায় জয়দুলের সংসার এখন অনিশ্চয়তায় রয়েছে।
এবিষয়ে পশু চিকিৎসক মোঃ কবির আহাম্মদের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম জানান, এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তাকে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।