| বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০১৯ | পড়া হয়েছে 471 বার
নবীনগর উপজেলায় স্মার্ট কার্ড বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নে জাতীয় পরিচয়পত্র হারানো বাবদ ব্যাংকের চালানের নির্ধারিত ফির চেয়ে বাড়তি টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা ভোটারদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানের নির্দেশে এসব হচ্ছে এমনি অভিযোগ উঠেছে। যদিও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এই অভিযোগ অস্বীকার করলেন।
তথ্যমতে, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে তাদের চালান ফরমের মাধ্যমে নির্ধারিত কোডে ৩৪৫ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দেয়া সহ নির্ধারিত ভেন্যু থেকে স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া নতুন ভোটারদের স্লিপ হারিয়ে গেলে তাদের ১২৫ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জেলার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (পুরনো ভোট কার্ড) হারিয়ে গেছে এবং নতুন ভোটারদের স্লিপ হারিয়ে গেছে তাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করা হয়েছে। বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম ব্যাংকে চালান ফরমের মাধ্যমে টাকা জমা দেয়ার কথা বলে ভোটারদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা করে আদায় করেছেন।
এদিকে সর্বশেষ গত ২৫ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলামের নেতৃত্বে স্মার্টকার্ড বিতরণে ভোটারদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। যেসব ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে তাদের চালানের টাকা ব্যাংকের পরিবর্তে সরাসরি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের কাছে জমা দিতে দেখা গেছে। এসব টাকার সিংহভাগই ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাচন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সরাসরি এভাবে ভোটারদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোনো নিয়ম বা বিধান নেই। এটা টাকা লুটপাট করার একটা কৌশল। কারণ ঠিক কতজন জাতীয় পরিচয়পত্র হারানোর অভিযোগ করেছে সেই হিসেবটা ঠিক থাকে না। পরে সংগ্রহ করা সম্পূর্ণ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সরাসরি এর সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে এই টাকা ব্যাংকের পরিবর্তে সরাসরি সংগ্রহ করাচ্ছেন। পরে কিছু টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে বাকিটা আত্মসাৎ করছেন বলে তিনি দাবি করেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রতি সপ্তাহে এসব টাকার সংগ্রহ করে থাকেন।
ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম বলেন, যারা জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেলেছেন তাদের কাছ থেকে ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার জন্য ৩৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। একটি করে স্লিপ দেয়া হচ্ছে। পরে এই টাকা ব্যাংকে জমা দেয়া হবে। বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, তিনদিনে জাতীয় পরিচয়পত্র হারানোর এমন ৪০০ জনের বেশি তার কাছে ৩৫০ টাকা করে জমা দিয়েছেন। তিনদিনে চেয়ারম্যানের কাছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জমা পড়েছে। টাকা তার কাছেই রয়েছে। পরে নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেয়া হবে। মানুষের সুবিধার জন্যই করছি। জেলার সব জায়গায় টাকা নেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, এভাবে টাকা নেয়ার বিধান নেই। ব্যাংকের রশিদ ছাড়া যেন কাউকে কোনো স্মার্ট বিতরণ করা না হয়ে সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান এমনটি করে থাকলে অন্যায় করেছে। টাকা আত্মসাৎ করছেন প্রসঙ্গে বলেন, আমাকে কিভাবে কে টাকা দেবে। আমাকে কেন টাকা দেবে।
সুত্র -যুগান্তর