ডেস্ক রিপোর্ট | মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০১৬ | পড়া হয়েছে 2568 বার
নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের দক্ষিন চকের ১৫০ একর ফসলী জমির পানি নিস্কাশনরে পথ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকার এক প্রভাবশালী। ওই চকের ১৫০ একর উর্বর জমি আদিকাল থেকে বর্ষা মৌসুমে আমন ধান ও শুষ্ক মৌসুমে রবি শষ্য, শাক-সব্জি ও পাটের ভাল আবদ হচ্ছিল। ওই চকের পানি নিস্কাশনরে পথ বন্ধ হওয়ার ফলে বিগত মৌসুমে সাধারণ কৃষকদের চাষকরা মিষ্টি আলু, গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন, লম্বা বেগুন, টমেটো ইত্যাদি ফসলাদী অতি বৃষ্টির পানি জমিতে জমে নষ্ট হয়ে যায়, এতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। সরেজমিন ওই এলাকার দক্ষিন চকে গেলে কৃষকরা অভিযোগ করেন এই চকে জমি থাকা এলাকার প্রভাবশালী মো. মাইন উদ্দীন(খোকন) অপরিকল্পিতভাবে তার নিজ জমিতে পুকুর খননকালীন ভ্যাকু মেশিন দিয়ে ওই চকের পানি নিষ্কাশনের খাল/নালাটির মুখ বন্ধ করে দেন। পানি নিষ্কাষনের ওই নালাটি বন্ধ করে তিনি তার জমির উপর তৈরি করা পুকুরে যাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাল/নালের উপর দিয়ে রাস্তা তৈরী করছেন।
কৃষক বেদন মিয়া পিতা সুরুজ মিয়া, আজম মিয়া পিতা মৃত আবদুল আলিম, মো. হনিফ পিতা মৃত এমদাদ আলী, শাহিন খান পিতা মৃত হারুন মিয়া, জহিরুল হক পিতা মৃত লাল মিয়া, সফিকুল ইসলাম পিতা মৃত জুলফু মিয়া, বাছির মিয়া পিতা মৃত শহিদ মিয়া, নিজাম উদ্দিন পিতা মৃত আবদুল আলিমসহ অনেক কৃষক ক্ষোভের সংগে বলেন, ‘১৭২৩ দাগে ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত সরকারি সিএস ম্যাপের চিহিৃত অংশের খাল/নালটি দিয়ে আদিকাল থেকে উজানের পানি ভাটির দিকে প্রবাহিত হতো। পানি নিষ্কাশনের এই পথ বন্ধ হয়ে গেলে জমি আবাদ করতে না পারলে আমরা শত শত কৃষক পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মারা যাব। আমরা বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমাদের র্দুদশার বিষয়টি জানিয়েছি কিন্তু কিছুই হচ্ছে না’।
এই শাহপুর গ্রামের ওই দক্ষিন চকের সমস্ত পানি শাহপুর টু চন্দনাইল সড়কের পাশের ওই নাল/খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অদের খালে গিয়ে পড়ে। শুধু ওই নাল/খালের মুখ বন্ধই না, দেখা যায় ওই সড়কের পাশের জমির কয়েকজন মালিক মো. আনু মিয়া পিতা মৃত আকবর মিয়া, বিল্লাল মিয়া পিতা জারু মিয়া, জহর মিয়া পিতা সুজাত আলী, নজরুল ইসলাম পিতা মৃত মদন মিয়া। তাদের জমিতে বাড়ি নির্মান করে পানি নিষ্কাশনের ওই খালটি বন্ধ করে বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা নির্মান করেছেন। ওইসব বাড়ির লোকজনরা জানান,তাদের জমিতে সৃষ্টি হওয়া খালে তারা রাস্তা তৈরী করছেন সরকারি কোন জায়গায তারা রাস্তা তৈরী করেননি।
কথা হয় এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক সামসুল হক ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের সাথে তারা বলেন, সরকার বা ব্যক্তি কেউই জনস্বার্থের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে কোন কাজ করতে পারে না। সরকারের কাছে একক ব্যক্তি বড় না আমজনতা কৃষক বড় ? এ প্রশ্ন রেখে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থে পানি নিষ্কাষনের পথ যাতে বন্ধ না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে আশা করি। এই বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত মোঃ মাইন উদ্দীন খোকন এর সাথে তিনি বলেন, আমি পুকুর কেটেছি আমার জমিতে, আমি কোন পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করিনি, পানি নিষ্কাশনের অনেক পথ রয়েছে, যে নালের কথা বলা হেচ্ছ সেটা খাল বা নাল নয় বিএস এস এটি হালট, এই হালটে সরকারি প্রজেক্টে রাস্তা তৈরী হ্েচ্ছ। কথা হয় ওই এলাকার চেয়ারম্যান(সদ্য নির্বাচনে পরাজিত বিএনপি সমর্থিত)মো. রফিকউল্লাহ্ বলেন, এটা বিএফএ হালট,খাল নয় মাইন উদ্দিন সাহেব প্রথমে ব্যক্তিগত রাস্তা শুরু করলেও পরে সরকারি প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রায় ২০০ফুট লম্বা ১২ফুট প্রস্থে সংযোগ সড়ক করার জন্য অনুমোদন পেয়ে কাজ শুরু করেছি। এ ব্যাপারে উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি আবগত হয়েছি, জনস্বার্থে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হবে এমন কোন কাজ করা হবে না, সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবাস্থা নেয়া হবে। ওই এলকার সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করেন, কার জায়গা সেটা বড় ব্যাপার নয়, পানি পথ হউক বা স্থল পথই হউক পানি বা মানুষ চলাচলা থাকলে তা বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই, জনস্বার্থে এই বিষয় গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।