মুহাম্মদ মনিরুল হক | শনিবার, ১৩ আগস্ট ২০১৬ | পড়া হয়েছে 1756 বার
মঙ্গলে পানি আছে এই খবরটা মহাবিশ্বের অন্যান্য গ্রহে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই বিষয়টা নিয়ে মঙ্গলের পাদদেশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। মঙ্গলা গ্রামের বাসিন্দাসহ আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা খেয়াল করছে মঙ্গলে পানির অস্তিত্বের খবরটা মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এখানকার নদী খননের কাজটি যেন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। মঙ্গলা গ্রামের বাসিন্দারা আশঙ্কা করছে এমন অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের কাজ চলতে থাকলে নদী ভাঙ্গনে তাদের গ্রাম নদীগর্ভে চলে যাবে। গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা করে কিন্তু নদী খননকারি জাহাজ মালিকের সাথে কথা বলার সাহস তাদের হয়না। ভয়াবহতা যখন প্রকট রূপ ধারণ করছে মঙ্গলার কয়েকজন তরুণ গেল জাহাজ মালিকের সাথে কথা বলতে। প্রথম তিনদিন তারা মালিকের সাথে কথা বলার সুযোগই পেল না। চতুর্থ দিন কথা বলার সুযোগ পেলেও তরুণরা যেন কথা বলে স্বাচ্ছন্দবোধ করছিল না। তরুণদল বুঝতে পারছিল জাহাজ মালিক তাদের সাথে কথা বলতে বিরক্তবোধ করছেন এবং রাগ চেপে রেখে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নদী খননের ব্যাপারে গ্রামবাসির আপত্তির কথা জানাতেই জাহাজ মালিক আর রাগ চেপে রাখলেন না। তরুণদের দলনেতা রিখিংরিচ খেয়াল করল, জাহাজ মালিক রেগে যাওয়ার সময় তার চেহারা অস্বাভাবিকভাবে বদলে যাচ্ছিল। রিখিংরিচ যখন ছোট ছিল তখন পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে মানুষ এসেছিল। তার বাবা তাকে দূর থেকে মানুষ দেখিয়েছিল। রিখিংরিচের মনে হচ্ছে জাহাজ মালিক যখন রেগে যাচ্ছে তখন তার চেহারাটা পৃথিবীর মানুষের মত দেখাচ্ছে। কি ভয়ংকর! কি ভয়ংকর!! স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতাধর জাহাজ মালিক গ্রামবাসির অভিযোগ আমলে না নিয়ে খনন কাজ চালিয়ে গেল। ফলশ্রুতিতে মঙ্গলার পাশের গ্রাম মরিন্টিও প্রায় পুরোটাই নদীগর্ভে চলে গেল। মরিন্টিওতে প্রথম যখন ভাঙ্গন শুরু হল তখন মরিন্টিও এবং আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ছাড়া আর কেউ বিষয়টাকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি।
কিন্তু নদী যখন ক্রমে ভয়ংকর হয়ে উঠল এবং ভাঙ্গন বাড়তে লাগল তখন পানিমন্ত্রী এলেন, পরিবেশ মন্ত্রী এলেন। উদ্বিগ্ন ভাব নিয়ে একে একে অন্যান্য মন্ত্রীরা আসতে লাগলেন। একেকদিন একেক মন্ত্রী আসছেন। প্রত্যেক মন্ত্রীই তার দলবল নিয়ে আসেন। প্রতিটা দলের সাথেই জাহাজ মালিক থাকেন। নদী ভাঙ্গনের ভয়াবহতা এবং তার সমাধান নিয়ে মন্ত্রীরা বক্তব্য দেন। বক্তব্য দেন জাহাজ মালিকও। নদী ভাঙ্গন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশের পর নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রশাসন উঠে পড়ে লেগেছে। নদীর ধারে বাধঁ বাধার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ভাঙ্গন ঠেকানোর যাবতীয় চেষ্টা করা হচ্ছে নদী পাড়ে। আর মাঝনদীতে চলছে নদী খননের কাজ। নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানে যতই বাধঁ বাধা হোক আর বালির বস্তা ফেলা হোক না কেন অপরিকল্পিত নদী খনন বন্ধ না হলে নদী ভাঙ্গন চলতেই থাকবে। আতঙ্কিত গ্রামবাসিরা নদী ভাঙ্গন নিয়ে তাদের আতঙ্কের কথা বলে। কিন্তু তাদের কথার আওয়াজ মন্ত্রীদের মাইক্রোফোন পর্যন্ত পৌঁছে না। রিখিংরিচ ভাবে মন্ত্রীরা কি আসলেই মূল সমস্যা বুঝতে পারেন না। নাকি বোঝেও না বোঝার ভান করেন। তার মনে হচ্ছে মঙ্গলের মন্ত্রীরা যতটা স্বার্থপরতা দেখাচ্ছে পৃথিবীর ভয়ংর মানুষেরাও হয়ত এতটা স্বার্থান্ধ আর ভয়ংকর হতে পারবে না।
লেখকঃ- মুহাম্মদ মনিরুল হক , নবীপুর (নবীনগর পশ্চিম ইউপি)
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |