এনামুল হক এনাম | শুক্রবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ | পড়া হয়েছে 1959 বার
বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শীতকালে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসে সূদূর সাইবেরিয়া থেকে । লেকগুলোতে লাল শাপলার ফাঁকে কিচির-মিচির শব্দে জলকেলি, সকাল-সন্ধ্যায় আকাশে ওড়াউড়ির দৃশ্য ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা। অতিথি পাখির আগমনে জাহাঙ্গীরনগরে বিরাজ করছে উত্সবের আমেজ। আর ব্যতিক্রমী আয়োজন হিসেবে পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বরাবরের মতোই এবারও ৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ‘পাখি মেলা-২০১৭’। ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই পাখী প্রেমিদের ভীড় লক্ষ্যকরা যায় । বর্তমানে লেকগুলোতে দৃশ্যমান পাখিগুলো এসেছে হিমালয় অঞ্চল থেকে, যা সরালি হাঁস নামে পরিচিত। তবে এটি দেশীয় অতিথি পাখি। আর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক অতিথি পাখি আসে সাইবেরিয়া থেকে। ল্যাঞ্জা হাঁস, খুনতে হাঁস, ভূতি হাঁস, ঝুঁটি হাঁস প্রভৃতি এ সময়ে বেশি দেখা যায়। নভেম্বরের শুরুতেই লেকগুলোতে অতিথি পাখি আসতে শুরু করে এবং ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে আবার ফিরে যায়।
জাহাঙ্গীরনগর পাখিদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী আবাসস্থল। ১৯৮৬ সালে জাহাঙ্গীরনগরে ৯০ প্রজাতির পাখি দেখা যেত। বর্তমানে ১৯৫ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। যার মধ্যে ১২৬টি প্রজাতি দেশীয় এবং ৬৯টি পরিযায়ী বা অতিথি প্রজাতির। দেশীয় প্রজাতিগুলোর মধ্যে ৭৮টি প্রজাতি ক্যাম্পাসে নিয়মিত বাসা বাঁধে। এত অল্প জায়গায় প্রচুর সংখ্যক পাখি বাংলাদেশের আর কোথাও দেখা যায় না । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে আপনি আরো দেখতে পাবেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনার, সংশপ্তক, অমর একুশে , সুদর্শন লেক এবং সিরামিক ইটের তৈরী লাল রংয়ের আবাসিক হল এবং অনুষদ ভবন । বটতলায় পাবেন স্বল্পমূল্যের উন্নতমানের খাবার যার মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ পদের ভর্তা রয়েছে । বিকালে পিঠা চত্বর জমে উঠে বাহারি নাম ও স্বাদের পিঠা উৎসব যেখানে গরম গরম পিঠা আপনার সম্মুখেই বানানো এবং পরিবেশন করা হবে । টারজান চত্বরে পাবেন উন্নত মানের চটপটি , ফুচকা এবং ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমান দোকানের মিক্সড আচার ।
কিভাবে আসবেন : ঢাকার গুলিস্থান থেকে ৩৩ কিঃমিঃ দূরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান । গুলিস্থান থেকে বি,আর,টিসি/শুভাযাত্রা/ঠিকানা/গুলিস্থান ধামরাই সহ আরো অনেক পরিবহন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ত্যবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে যাতায়ত করে ।
লেখকঃ এনামুল হক এনাম, সভাপতি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Email: anamulhoque1015@gmail.com