শাহাদাত হুসাইন | শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০১৬ | পড়া হয়েছে 1533 বার
সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি,আন্দোলন,সংগ্রাম,বীরত্ব্যের অসংখ্যগুণের অধিকারী আমার জন্ম শহর প্রিয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ।পীরজী হুজুর (রহঃ) হাফেজ্জী হুজুর (রহঃ)মুফতী নুরুল্লাহ (রহঃ)এর স্মৃতি ধন্য। ফখরে বাঙাল মাওলানা তাজুল ইসলাম , মাওলানা সিরাজুল ইসলাম(বড় হুজুর)মুফতী ফজলুল হক আমিনী মাওলানা রহমাতুল্লাহ্ রাহিমাহুল্লাহুর মত দেশ বিখ্যাত ওলামায়ে কেরামের জন্মভূমি আমাদের এই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া। এমাটির গর্বিত সন্তান দেশ বিখ্যাত আলেম মাওলানা সাজিদুর রহমান , মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব।আলেম-ওলামা দ্বীনদার মানুষের শহর হলেও অত্র এলাকার হিন্দু-মুসলমানদের রয়েছে শান্তিপূর্ন সহাবস্থান।এখানে মসজিদ-মাদরাসার পাশাপাশি রয়েছে হিন্দুদের মন্দিরও।দীর্ঘদিন যাবত আমরা চলে আসছি গলাগলি করে কেউ কারো বাধা হয়ে দাড়ায়নী।ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নামটি জুড়েই রয়েছে হিন্দুত্ব্যবাদের গন্ধ। এই অঞ্চলের হিন্দু জমিদার বাবুদের নির্মম অত্যাচারের কথা এখনো ঘুড়ে-বেড়ায় মানুষের মুখে মুখে। কালের পরিক্রমায় এই অঞ্চলের মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী হওয়ায় আমরা কিন্তু হিন্দু জমিদার বাবুদের অত্যাচারের কথা মনে রেখে প্রতিশোধ প্রবন হয়ে উঠেনী। ইসলাম শান্তির ধর্ম শান্তির এই বাণীকে আকড়ে ধরেই যার যার ধর্ম বিশ্বাসের উপর সহাবস্থানে রয়েছে সব ধর্মের লোকজন।
সম্প্রতি সময়ে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগরের এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে আমাদের কাবা শরীফকে অবমাননা করে ছবি পোষ্ট করে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের কলিজায় আঘাত করেছে।এতবড় আঘাতের পরেও আমরা শান্তিপূর্ন প্রতিবাদ করেছি।পরবর্তীতে নাসিরনগরে যা ঘটেছে তা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা । নাসিরনগরের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল ০২ নভেম্বর বূধবার রাতে কে-বা কারা ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সর্বমহলের কাছে সম্মানিত বড় হুজুর (রহঃ) এর প্রতিষ্ঠিত ভাদুঘর মাদরাসার গেইটে তালা লাগিয়ে পবিত্র কাবা শরীফের উপর হিন্দুদের মুর্তির ছবি বসিয়ে মাদরাসার গেইটে লাগিয়ে আবারো ক্ষোভের জন্ম দিয়েছেন। কারা করছেন এইসব? মুসলিম অধ্যুষিত এই জনপদের শান্তি-শৃংখলা নষ্ট করার তৃতীয় কোন পক্ষের পায়তারা নাকি উগ্রবাদী হিন্দুদের স্পর্ধা ?এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের বের করতে হবে।এই সত্যটা বের করতে প্রশাসন এবং সরকার এগিয়ে আসবেন আমাদের প্রত্যাশা।
দ্রুত এর সমাধান বের না করতে পারলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হবে।সরকার এবং প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে এইটা আমাদের ধর্ম বিশ্বাসের মুলে আঘাত করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশকে অশান্তির কবল থেকে রক্ষা করুন। দেশের জন্মলগ্ন থেকে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সহাবস্থান করে আসা এই সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট রাখুন।। সম্প্রীতি বিনষ্ট করার লক্ষে যে কুচক্রী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের খুজে বের করে শাস্তির কাঠগড়ায় দাড় না করতে পারলে দেশে অরাজকতা তৈরী হবে। আলেম সমাজও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছেও বিনীত নিবেদন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে সিদ্ধান্ত নিবেন। কোন কর্মসূচী ঘোষনা দেওয়ার আগে ভেবে চিন্তে কর্মসূচী ঘোষনা করবেন। পবিত্র কাবাঘরের সাথে বেয়াদবি মেনে নেওয়ার মত নয়। অনতিবিলম্বে পবিত্র কাবাঘর নিয়ে চক্রান্তকারীদের গ্রেপ্তার করা হোক। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের গ্রেপ্তার করা হোক। কাবাঘরের সাথে বেয়াদবি করার ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আক্রমণ সঠিক ইসলাম মেনে চলা কেউ সমর্থন করতে পারেনা।
সুতরাং হামলা সমাধান নয় বরং হিন্দুদের নিরাপত্তা দেওয়া আমদের দায়িত্ব।
লেখকঃ- শাহাদাত হুসাইন। মদীনা মুনাওয়ারাহ্।