শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল | সোমবার, ২৯ আগস্ট ২০১৬ | পড়া হয়েছে 38052 বার
স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও নিজ জেলার সঙ্গে কোনো সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হয়নি। এমনি একটি উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার রাধিকা-শিবপুর-নবীনগর সড়কে প্রায় ৯ বছর আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ব্রিজ ও ৩টি কালভার্ট নির্মাণ করলেও দীর্ঘ সময়ে সড়কটি নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার উপজেলারসহ জেলার পশ্চিমাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রাধিকা-শিবপুর-নবীনগর সড়ক নির্মাণে ২০০৭ সালে বর্তমান মূল্যে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে নবীনগর উপজেলার নাড়ুই এলাকায় তিতাস নদীর ওপর ৩০৪ মিটার দীর্ঘ, কনিকাড়ায় ৯৩ মিটার দীর্ঘ দুটি সেতু ও ৩টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়। এদিকে নির্মিত ব্রিজ ও কালভার্টের উভয়পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সড়ক পথে ঢাকা যেতে হলে ওই এলাকার মানুষকে নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ-কুমিল্লা সড়কপথে ময়নামতি হয়ে অথবা বাঞ্ছারামপুর-আড়াইহাজার ফেরি পার হয়ে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে যাতায়াত করতে হয়। নবীনগর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে কোনো রোগী, ট্রাকে পণ্য নিয়ে জেলা সদরে যেতে হলে কোম্পানীগঞ্জ দিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছাতে হয়। যার দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারের অধিক। এর ফলে অনেক সময় পথেই রোগীর মৃত্যু হয়, পণ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে এলাকার শিক্ষার্থীদের নৌ-পথে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেক সময় দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আমির হোসেন জানান, ইতিমধ্যে ‘নবীনগর- শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহতেশাম রাশেদ জানান, রাধিকা-শিবপুর-নবীনগর সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সড়কটি নির্মাণ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নবীনগরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, সড়কটি হলে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নবীনগরসহ জেলার পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের দুর্দশা লাঘব হবে এবং এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।